যারা এখনো শুধুই বন্ধু, বন্ধুর চেয়ে বেশী হয়েও অন্ধ, কিংবা জানালার একটা পাল্লা বন্ধ, একটু ভাল আর একটু মন্দ

তাদের জন্যেই কিছু এবড়ো খেবড়ো ছন্দ, তাদের জন্য কবিতা-গল্প, অল্প স্বল্প প্রেম, আড্ডা, হঠাৎ মেঘ এবং বৃষ্টি।

রকমারির একরকমের আরেকরকম

একটা মাল লেখা হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু কিছুতেই আপলোড করতে পারছিনা। কারণ আমার ইউনিভার্সিটি ওয়াই-ফাই কানেকশন বন্ধ করে দিয়েছে। তা বন্ধ করেছে তো করেছে, তাতে আমার থোরাই না কিছু গেছে। মোবাইল এ নেট কানেকশন আছে, কিন্তু মোবাইল এ ব্লগ হয়না। এদিকে কিছু তো আপলোড করতেই হবে, নইলে মান থাকে না। মহান এক লেখক আমি। বহুদিন ধরে এই ব্লগে লিখছি না। এছাড়া হস্টেলে কোনও কাজও নেই। মানে নেই, বা বলা ভালো কাজ করার ইচ্ছে নেই। যা কাজ ছিল হয়ে গেছে। এখন বসে বসে বোর হওয়ার থেকে একটু সাহিত্যচর্চা করলে মন্দ হয় না। কি বল? হয়তো বিশ্বাস করবেনা ৪০০০ এর উপরে যে হস্টেলে ছেলে থাকে সেখানে এখন আমরা ৪ জন আছি। আর মনে হয় পুরনো বছরের শেষ আর নতুন বছরের শুরুটা এভাবেই যাবে।


যদিও লিখতে বসে গেলাম, কিন্তু এখনও জানিনা কি নিয়ে লিখবো কিংবা কেন লিখবো? নিদেনপক্ষে কিছু একটা মাথাতে থাকলেও চলতো। কিন্তু নেই। বিলকুল ফাঁকা। যা ছিল সেটা তো আগের পোস্ট এ লিখে দিয়েছি। নতুন লেখাটাও আপলোড করতে পারছিনা। ল্যাপিতে শোভা পাচ্ছে। মানে সেভ করা আছে। কিন্তু নেট নেই, ফলে শিশু আর ভূমিস্ট হতে পারছেনা।


আর এই গোলমালে বাড়ি যাওয়াটা হল না এবার। অবশ্য এটাই স্বাভাবিক ছিল। যেখানে কেউ জানেনা কাল চাকরির কি অবস্থা হবে সেখানে বাড়ি যাওয়ার মত এত বড় একটা ঘটনা কতখানি অনিশ্চয়তায় ভরা থাকবে সেটা বোঝানোর জন্য গরু খোঁজার কিংবা হেইসেনবার্গ হওয়ার কোনও দরকার নেই। যদিও আমার বাড়ি যাওয়ার প্রতি কোন আকর্ষণ এখন আর নেই। যদিও বাড়ি গিয়ে মজা বা আড্ডা মারার মত বন্ধুরা কেউ নেই। যদিও আমার বাড়িই নেই।


চমকে যেওনা। আমার বাড়ি সত্যিই নেই। এক কালে ছিল, যখন আমি কৈলাসহরে থাকতাম। তখন আমার একটা বাড়ি ছিল বটে। তারপর আমি স্বগৌরবে কৈলাসহরকে লাথি মেরে কলকাতাকে নিজের জীবনে বরণ করে নিলাম। কলকাতায় যেটা ছিল সেটা আমার নিজের না হলেও কখনো নিজের নয় বলে মনে হয়নি।


তা একখানা ইচ্ছা মনে এসেছিল এবার বাড়ি যাওয়ার। মানে কলকাতার বাড়ি। আমি কলকাতায় গেলে, ঘুরতে গেলে আর ফোন আসেনা। আগে কিন্তু বিস্তর আসতো। “কোথায়?”, “কখন আসবি?”, এবং অবশ্যই “কার সাথে?” প্রথমটার উত্তর “রাস্তায়”, পরেরটা “জানিনা”, শেষেরটা “বলবো না।”  ন্যাঁকা, যেন না বললে কেউ বুঝবে না।


তা সে রাম নেই (এবং “রাম”) সেই অযোধ্যাও নেই। সুতরাং আমার বাড়িও নেই। মায়ের দুশ্চিন্তা নেই, আমারও শান্তি নেই। চাকরির নিশ্চয়তা নেই। ছেলেদের গার্লফ্রেন্ড নেই আর মেয়েদের বয়ফ্রেন্ড নেই (মানে সেখানেও রিসেসন) কিংবা গে-দের বয়ফ্রেন্ড আর লেবুদের গার্লফ্রেন্ড নেই। ভোট যদিও আছে, কিন্তু অবাধ ভোট নেই। কৃষি নেই। কৃষি থাকলে শিল্প নেই, শিল্প থাকলে কৃষি নেই। নেই নেই আর নেই। মমতা জিন্দাবাদ। চারিদিকে “নেই” এর জয়-জয়কার। জানি না এখন কি অবস্থা কলকাতার।


কিন্তু এসব বাজে কথার মোদ্দা কথা হল আমার বিস্তর ইচ্ছা থাকলেও আপাতত কলকাতা যাওয়ার আশা নেই। কেন নেই সে না হয় বলছি। Now close all these things. You won’t get bored. কিন্তু তুমি এখন ভাববে এই ছেলে যে আগের কয়েকটা লাইন জুড়ে কলকাতার চর্ব-চোষ্য-লেহ্য করে গেছে, এটা কি উচিৎ হল তার? আমি জানিনা উচিৎ না অনুচিৎ আর এই কথাগুলো পাবলিক করে ফেলার কথা বলছো? পাবলিক জানলে আমার বাল ছেঁড়া যায়। আমি জানি, কলকাতা জানে, আমার কাছের লোকজনরা জানে। এরপর বাইরের লোকের উপর আমার কিছু যায় আসে না। সবাইকে গুরুত্ব দিতে আমি পারছিনা।


ও হ্যাঁ আমি বিশ্বাস করি আমার মা একজন দায়িত্বশীল মহিলা। সমস্যা হল মা আমাকে একটু বেশী চোখে চোখে রাখে, মানে রাখতো। সেটা অন্যায় না। আমি বাবা হলে (“মা” হওয়াটা logically & biologically কোনভাবে সম্ভব না) হয়তো বুঝতে পারবো। মা আমার ভালো চায়। ব্যস্ এই অবধি ঠিক আছে। ভুলটা হল মা জানেনা কিসে আমার ভালো হবে আর কিসে খারাপ। কিংবা জেনেও না জানার ভান করে নিজের ই-গো কে রাখার জন্য। আমি জানিনা, আমার মনে হয়। আমার বিশ্বাস ভুল মনে হয়না আমার। মা চায় আমি ভালো থাকি। খুব সত্যি কথা। ভুল চাওয়াটা হল যে মা চায় আমি তার মত করে ভালো থাকি। আমার মত নয়। আমার জীবনে একটা ভালো মেয়ে আসুক/থাকুক। সেটা খুবই উচিৎ চাওয়া। কিন্তু মেয়েটার সাথে যখন আমার first-hand-relation, সেখানে আমার ইচ্ছেটা কি প্রাধান্য পায় না?


সহজতম উত্তর হল “না পায় না” কারণ আমি ছোট আছি, হ্যাঁ পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন এর প্রথমবর্ষেও আমি ছোট আছি। এখন মা প্রায়ই বলে ‘তুই এখন বড় হয়েছিস, বুঝতে শিখেছিস’, তা হ্যাঁ বুঝতে শিখেছি। আমার বন্ধুরাও বলে আমি একটু বেশীই বুঝি, একটু বেশীই ভাবি। একটু বেশী চিন্তা করি। কিন্তু আমি এই চিন্তা অনেক আগে থেকেই করতাম। সেটা আমার মা জানতো, মানত না। জানিনা কেন? মনে হয় এটা মা-দের হয়। Sure na.


সুতরাং চুম্বকে এই হল যে কৈলাসহর আমার অনেক কিছু হয়েও কিছুই না। কলকাতা আমার কাছে অনেক কিছু। প্রথম ভালবাসা। জলন্ধরও খুব সুন্দর জায়গা, কিন্তু গার্ল ফ্রেন্ড না। আহা কি analysis? কি confusion আর কি চাহিদা? মানুষের চাহিদা আর দাবীর শেষ নেই।


ছাড়ো ওসব। চল এসব কাটিয়ে দুজনে মিলে বকখালি যাই। আর হোটেলে একরাত্রি কাটিয়ে আসি। জমবে ভালোই। আর তোমাকেও এক থেকে একাধিক হওয়ার চিন্তা করতে হবেনা। টেকনোলজির যুগ এটা। গোলাপি টুপি কাজ না করলে গোলাপি চকলেট কাজ করবেই। দুটো জিনিষ কখনো একসাথে ব্যর্থ হয় না। কিংবা দুজনে কখনো একসাথে ভুল হতে পারেনা। সমুদ্রে আপত্তি থাকলে দার্জিলিং যাওয়া যেতে পারে। যদিও এই রিসেসনের মার্কেটে বকখালিটাই সস্তা হতো। ১০০০ এ দুজনের হয়ে যেতো।


মাইরি বলছি ডিসেম্বরের দুপুরে একটা আলাদা ব্যাপার আছে। সেটা বোঝানো খুব চাপের। সেটা feel করতে হয়। কিছুটা বলি। ধরো একটা ধু-ধু মাঠ। একখানা গাছ। গাছের পাশে রোদে একখানা সাইকেল। দূরে একটু ফাঁকা জায়গায় ধুলোর ঘূর্ণি পাকিয়ে উঠছে গরম ধোঁয়া। আর গাছের তলাতে অসম্ভব ঠাণ্ডা। আর গাছের সেই ছায়ায় আমি। আহা রে। তুমি সেখানে ব্যর্থ। এটা আমার রাজ্য। তুমি আইসক্রিমওয়ালা হয়ে আসতে পারো। এর বেশী বোঝাতে পারছিনা মাফ করো।


কিন্তু তোমাকে বোঝানোর কি আদোও দরকার আছে? তুমিও তো জানো ডিসেম্বরের দুপুরে প্রেমটা ব্যাপক জমে। আর সেটা ঘনীভূত হয় যদি আকাশে, ঐ ধরো বিকেল চারটে নাগাদ একটু অন্ধকার দেখা যায় আর আরও আধ ঘণ্টা পরে ঠাণ্ডা বাতাসে প্রেমের গল্প উড়ে আসে। তখন তুমি না হয় পাশে থেকো। আইসক্রিম ওয়ালা না হলেও চলবে তোমার। তখন অন্য তোমাকে আমার চাই। কিংবা ‘তোমাকে চাই।’ কবির সুমন বলেছিলেন, তোমাকে চাই। তখন তুমি ছিলে প্রেমিকা (পড়তে হবে সাবিনা ইয়াসমিন) এখন তুমি লোকসভার আসন। আহা রে। তোমার এই দুর্গতি হওয়ার আগে তোমাদের পাড়ার পাঠি-ছাগলটা মারা গেলনা কেন?


সে যাই হোক, আমি কবীরও না, আর সুমনও না। আমি দ্বীপ। সুতরাং তুমি আমার “যে” ছিলে, “সে”ই থাকবে। হয়তো বা তোমার নাম পাল্টে যাবে (মানে পাল্টে যাবেই), হয়তো বা তোমার চেহারা পাল্টে যাবে (মানে যাবেই), হয়তো বা তোমার বয়স বেড়ে যাবে (মানে বেড়ে যাবেই), কিন্তু তুমি পাল্টাবেনা। বিতর্কের মানুষটাকে পাল্টানো খুব একটা সহজ ব্যাপার না। আর আমার মনে হয় তুমি exceptional না। জগৎ এতটাও সোজা এখনও হয়নি। আর হলেই বা কি? আমার তো ভোট নেই (সেরকম কিছুনা, আমার ভোটার আই-কার্ড এ নামের বানান ভুল আছে), আর আমার কেন্দ্র কৈলাসহর, ভোটের সময় থাকিনা। সুতরাং কলকাতা নিয়ে আমার মাথাব্যাথা হবে কেন?


আমি তুলনা ব্যাপারটাকে খুব একটা পছন্দ করিনা। কৈলাসহর একরকম, জলন্ধর আরেকরকম, আর কলকাতাটা রকমারির একরকমের আরেকরকম। And I am happy with her. I don’t want her to be Shanghai, I don’t want her to be Singapore. I like the way she is. She may be a bitch at times, but she is my kind of bitch. Yes, that’s what my girlfriend should be at first. সিরিয়াসলি বলছি জীবনে তুলনা করা ছাড়ো, একটু good এর পেছনে দৌড়াও। কারণ সব বাপেরই এক বাপ আছে। সব “better” এর “better” আছে। Better than the best ও আছে। কতদিন better কে তাড়া করবে? আমার দ্বারা ওসব হবেনা। কোনদিন হয়নি। মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটারের কনফিগারেশন হলে না হয় হতো। কিন্তু সব কিছুকে এক করে দেখা মনে হয় মানুষের সব থেকে বড় রোগ। আর তার থেকেও বড় রোগ হল সামান্য জেনে কোন সিদ্ধান্তে আসা, কিংবা একেবারে না জেনেই। যে রোগগুলো সবগুলোই আমার খুব কাছের একজনের ছিলো, আছে এবং আশা ভবিষ্যতেও থাকবে।


পুনশ্চঃ এটা কিন্তু একটা পোস্ট স্কিপ করে যাওয়া। এর আগে আরও একটা পোস্ট আছে, যা নেট কানেকশন সমস্যার জন্য নামছে না।
পুনশ্চঃ লাস্ট লাইনে “আমার খুব কাছের একজন” এর পরিচয় জানতে চেয়ো না। যদি বুঝতে না পারো সেটা তোমার দোষ আমার না।

NB1: কলকাতা সম্পর্কে "রকমারির একরকমের আরেকরকম" ডায়লগটা কবি শুভদ্বীপ দেবের একটি কবিতা থেকে ধার করা, আমার নিজের লেখা নয়, মতামত বা অনুভুতি এরকম হওয়ায় লিখলাম।
NB2: এটা হস্টেলে বসে লেখা, একটি ল্যাদাক্রান্ত শুক্রবারের দুপুরে। কাজ ছিল না। কিছুটা বোর হয়ে আর কিছুটা মদ্যপান করে লিখে ফেললাম।

14 comments:

Sampriti Roy said...

Khub sohoj sundor ebong mon theke likhechhis ei blogta. Osadharon hoyechhe.
Nijer baari, nijer shohor ek odbhut jinis, odbhut taan. amar nijer shohor ebong prothom prem ekhono kolkata (majhe holdia ekta misti crush chhilo thik e) taai jakhan anondo hoy mone hoy chechiye sara kolkata ke janai. Ei shohorer rastay eka eka choleo ekta odbhut anondo petam . Abar ek e songe jakhon raag hoto, dukhho hoto, ghrina hoto, setao e shohorer oporer hoto, ekhono hoy.

Raj said...

Hi Deep, was reading ur blog. Very gud thoughts. Ur writing has depth. Just like u. It clearly proves that u think about life, ppl and relaltionships. Keep it up. mate.

Barnali Thakur said...

Again very well written.
Tor onubhuti gulo khub bhalo.
Keep it up. :)
kolkata theke onek kichu peyechis.
even "someone to think abt".
Awesome :)

Priyanka said...

Again very well written.
Tor onubhuti gulo khub bhalo. Ar notun kore ki bolbo.
Keep it up. :)

Deep said...

Thanks Raj. Your comment was partially true. I hav thaughts but not good thaught.

@Sampriti: কলকাতা আমাকে আবার ডাকছে মনে হয়।
@Barnali & Priyanka: ধন্যবাদ।
আর প্রিয়াঙ্কা তোর "Church Gate" এর গল্পটা অসাধারন হয়েছে।

Mousumi Dutta said...

kolkata ke ar koto bhalobasbe? Aar etoi bhalobasa jokhon tokhon chole eso abar. Ar tumi sotti paro kichu baje bokte. Baje bokar jonno tomake award dewa uchit.

Deep said...

বাজে বকার জন্যই তো এই ব্লগ। আর আমি জানি আমার থেকে বাজে আর কেউ লিখতে পারবে না। আর এওয়ার্ড টা তো আমি তোর কাছ থেকে পেয়েই গেছি। শুধু বাকি রইল কলকাতায় এসে receive করতে হবে। ভালো থাকিস। আর এই ব্লগে আরো বাজে বাজে কমেন্ট দিবি।

Arunavo said...

I loved the connected that binded me while reading...M following ur blog .. got the link from shweta's blog!

Shamik Mitra said...

Very well written :) ..keep writing... :)

Devjani said...

Hi,
I read most of your work here. What I love the most about all of it is that every piece of yours has one or two lines which strike me like a stab of knife, but only painless and bloodless. To put in your words - "Harmless, but strong." And it is as real as the tangible, and at the same time, as abstract as even the thought of the intangible.

Tista said...

Notun kore kichu lekhar nei.

Pallavi Bhattacharya said...

You've captured this past year in the few words which we find difficult to pen down.. It's perfect.

Pallavi Bhattacharya said...

You've captured this past year in the few words which we find difficult to pen down.. It's perfect.

Pranob Mukherjee said...

Super like.